সূচিপত্রঃ ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম -ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম
- ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম
- ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম
- কোন ময়েশ্চারাইজার ভালো
- ময়েশ্চারাইজার দাম কত
- ময়েশ্চারাইজার যুক্ত ক্রিম এর নাম
- শেষ কথা
ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম| তৈলাক্ত ত্বকের ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার
আবহাওয়া বদলানোর সাথে সাথে এ সমস্যাগুলোর প্রবণতা ও ধরন ওঠানামা করে থাকে। তবে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য সমস্যার মাত্রাটা একটু বেশি হয়ে থাকে। তৈলাক্ত ত্বকে সবচাইতে বেশি প্রবণতা থাকে। কেননা, ত্বকের তেলের সাথে বাইরের ধুলাবালি ও ময়লা খুব সহজেই আটকে যায়। তাছাড়া ত্বক সর্বদা তৈলাক্ত থাকার কারণে ত্বকের জন্য উপযুক্ত ময়েশ্চারাইজার পাওয়া অনেক কঠিন বিষয় সেজন্য সহজলভ্য কয়েকটা ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম বা তৈলাক্ত ত্বকের ঘরোয়া ময়শ্চারাইজার বানানোর নিয়ম শিখে নিয়ে নিজেই ঘরোয়া উপাদান গুলো দিয়ে ঘরে বসে তৈরি করতে পারবেন। চলুন তাহলে দেখে নিই তৈলাক্ত ত্বকের ঘরোয়া মশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম গুলো-
নারিকেল তেল দিয়েঃ হাফ কাপ নারিকেল তেলের সাথে তিনটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং লেভেন্ডার এসেন্সিয়াল অয়েল ১২ফোঁটা নিতে হবে। গরম পানি একটা বাটিতে নিতে হবে। তার ওপরে একটা বাটি নিয়ে নারকেল তেল ঢেলে ভালো ভাবে গলিয়ে নিতে হবে। এরপর তার মধ্যে বাকি সবগুলো উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ওই গরম পানিতে বাটি বসানো অবস্থাতেই সবগুলো করতে হবে। তারপর পুরো ঠান্ডা করে নিতে হবে। ঠান্ডা হয়ে গেলে একটা কাচের পাত্রে রেখে ব্যবহার করতে হবে।
অ্যালোভেরা ময়েশ্চারাইজারঃ নারকেল তেল নিতে হবে দুই চামচ, চার চামচ এলোভেরা জেল এবং এক চামচ ভিটামিন ই অয়েল ও দুই চামচ আমন্ড অয়েল নিতে হবে। এরপর প্রথমে একটা পরিষ্কার বাটিতে এলোভেরা জেল নিতে হবে। তারপর নারকেল তেল ওর মধ্যে মিশিয়ে নিতে হবে। খুব ভালোভাবে মিশে গেলে ওর সাথে ভিটামিন ই এবং আমান্ড অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। এটা প্রতিদিন গোসলের পরে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এটা ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের দাগ এবং ছোপ থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও ত্বককে শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে থাকে। যাদের ত্বকে সমস্যা থাকে এই ময়েশ্চারাইজারটা তাদের জন্য খুব ভালো কাজ করবে।
অলিভ অয়েল দিয়েঃ হাফ কাপ অলিভ অয়েল, ভিটামিন ই ক্যাপসুল দুই টা, নারকেল তেল এক চামচ এবং বিসওয়াক্স এক চামচ নিতে হবে। প্রথমে নারকেল তেল এবং অলিভ অয়েল তেল খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নেয়া লাগবে। এরপর এর মধ্যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল দুইটা ভেঙে দিতে হবে। এবার পুরো মিশ্রণটি গরম করে ঠান্ডা করে নিতে হবে। তারপর বোতলে ভরে রাখতে হবে। এই ময়েশ্চারাইজার কিন্তু শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব ভালো কাজ করবে। তবে বোতলটা সূর্যের আলো পড়ে এরকম জায়গাতে রাখা যাবে না।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম
আমরা এতক্ষন ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জানলাম। এখন জানব ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের সাধারণত দুটি সময় হচ্ছে দিনের শুরুতে এবং রাতে ঘুমাতে যাবার আগে। এছাড়াও দুপুরে যখন আমরা গোসল করি তখন আমাদের কোষ অনেকটা গরম হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে শরীরের আদ্রতা বজায় রাখতে সেই সময় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশিরভাগ সময়ে দিনের বেলায় বিভিন্ন কাজের পর আমাদের ত্বক তৈলাক্ত হয়ে ওঠে। সেই সময় আমরা পরিষ্কার - পরিচ্ছন্ন হয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা আমাদের উচিত।
সকালে ঘুম থেকে উঠার পর ফেসওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে তারপর উচিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। অপরদিকে রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ত্বক ভালো ভাবে ফেসওয়াস বা আপনার যেকোনো পছন্দের ক্লিনজার দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। কিছুটা ড্রাই হলে টোনার সিরাম ত্বকে ব্যবহার করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবার আগে ত্বকে কোন অয়েল বা তেল যেন ব্যবহার না করে। ওয়েলিং স্কিন কেয়ার হচ্ছে এ ময়শ্চারাইজারের পরবর্তী ধাপ। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার সময় কৌটা থেকে নিয়ে ডট আকারে তা পুরো ত্বক এবং গলার এরিয়াতে লাগিয়ে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিভাবে ব্যবহার করবেন?
এরপর হাত দিয়ে তা আপওয়ার্ড মোশন অর্থাৎ ত্বকের সাথে অর্ধমুখীভাবে সেটা মাসাজ করে নিতে হবে। ক্রিম মাখার সময় ভুল করেও নিচের দিকে চামড়া টানবেন না। এতে করে কম বয়সেই চামড়া ঝুলে পড়ে। এবং বয়সের ছাপ কম বয়সেই ত্বকে পড়ে যায়। আবার অনেকেই ক্রিম হাতে নিয়ে জোরে জোরে গালে ঘষে। এটাও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হয়ে থাকে। এটা ত্বককে ড্রাই করে দিবে এবং বয়সের ছাপ বাড়িয়ে তুলবে। সেজন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবার সময় ত্বক এবং গলার চামড়া যেন ঝুলে না যায় তাই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে হবে।
কোন ময়েশ্চারাইজার ভালো| বাজারের সেরা ময়েশ্চারাইজার
এখন আমরা বাজারের সেরা ময়েশ্চারাইজার বা ত্বকের জন্য কোন ময়েশ্চারাইজার ভালো তা নিয়ে আলোচনা করব। টক শীতে আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে শুষ্ক হয়ে ওঠে। ফলে ত্বকের পিগমেন্টেশন এর সমস্যা থেকে খসখসে হয়ে ওঠে ত্বক। ত্বক ও ঠোট ফাটার মত সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। শীতের সময় ত্বকের যত্নে ত্বক আর্দ্র রাখা দরকার। ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করতে পারেন। ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে সঠিক ময়েশ্চারাইজার সাহায্য করে থাকে। একটি প্রতিরোধক স্তর ত্বকের বাইরে তৈরি করে। এতে করে ক্ষতিকর জীবাণু ও ধুলাবালি বাইরে থেকে সহজেই ত্বকের ক্ষতি করতে পারবে না। ত্বকের দাগ দূর করতে বা পিগমেন্টেশনের সমস্যা দূর করতে ও ময়েশ্চারাইজার অনেক জরুরী।
শীতে ঘরে বাইরে যেখানেই থাকেন না কেন, ত্বক অনেক দ্রুত আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। আমাদের ত্বকের এই হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ময়েশ্চারাইজার মূলত অনেক সাহায্য করে থাকে। ময়েশ্চারাইজার বলিরেখা রোধেও জরুরী। অন্যদের তুলনায় যাদের ত্বক শুষ্ক তাদের বলি রেখা খুব দ্রুত পড়ে যায়। অনেকেরই শীতের সময় সানস্ক্রিন ব্যবহারের অনীহা থাকে। যার ফলে ত্বকে সানট্যান বা সানবার্নের মত সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি শীতের সময় আরো বেশি ত্বকের ক্ষতি করে থাকে। এ সময় এসপিএফ +৫০ যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ত্বকের সুরক্ষায় বেছে নিতে হবে। এ ধরনের ময়শ্চেরাইজার আমাদের দেশের আবহাওয়া অনেক জরুরী।
ময়েশ্চারাইজার দাম কত
শীতে ত্বকের শুষ্কতা থেকে বাঁচার জন্য অনেকেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে থাকেন। অনেকেই অনেক রকম ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন। সেক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজারের দাম বিভিন্ন জনের বিভিন্ন দাম হতে পারে। তার মধ্যে থেকে আমি আজকের এই পোস্টে কয়েকটা ময়েশ্চারাইজার দাম কত তা তুলে ধরেছি। ইয়ার্ডলি ময়েশ্চারাইজার এর দাম হবে ৮৩০ থেকে ৯৫০ টাকা। প্যারাসুট ময়েশ্চারাইজার এর দাম হবে ১৯০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে দাম পড়বে। ওলে ময়েশ্চারাইজার এর দাম ৩৬০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে পড়বে। এবং গ্লিসারিন ময়েশ্চারাইজার এর দাম পড়বে দেড়শ থেকে ৩০০ টাকার এর ভিতরে। এছাড়াও কমবেশি হতে পারে। এর থেকে দামি ময়েশচারাইজার ও আছে আবার কম দামে ময়েশ্চারাইজার ও রয়েছে।
ময়েশ্চারাইজার যুক্ত ক্রিম এর নাম
সাধারণত ময়েশ্চারাইজার আর ক্রিম এক জিনিস। কিন্তু দুটোর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতাকে ফিরিয়ে আনতে এবং সেটাকে ধরে রাখার জন্য বিশেষভাবে কার্যকরী। অপরদিকে ত্বকের উপরে ক্রিম হালকা একটা অদৃশ্য আস্তরণ তৈরি করে থাকে। ত্বকের উপস্থিত জলের অণুকে ত্বক থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য বাধা সৃষ্টি করে থাকে। ময়েশ্চারাইজার ক্রিমের তুলনায় খানিকটা ঘন হয়ে থাকে। স্বাভাবিক ও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ক্রিম আদর্শ এবং ময়েশ্চারাইজার শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
আরো পড়ুনঃ মুখের দুর্গন্ধ দুর করার সহজ উপায়।
যাদের ত্বকের মধ্যে আর্দ্রতা কম এবং পানির পরিমাণ কম অর্থাৎ ত্বক শুষ্ক তাদের জন্য দরকার ময়েশ্চারাইজার। অপরদিকে তৈলাক্ত ত্বকের আসল রূপটা কিন্তু ডিহাইড্রেটেড ওয়েলি। অর্থাৎ, ত্বক থেকে পানি এতটাই দ্রুত চলে যায় যে নিজে থেকেই ত্বক তেল উৎপন্নের মাধ্যমে ত্বকের উপরে আস্তরণ তৈরি করে থাকে পানির কণাগুলোকে ধরে রাখার জন্য। প্রকৃতপক্ষে সেই পরিমাণ তেলের প্রয়োজন নাই। সেজন্য তৈলাক্ত ত্বক থেকে যেন পানি যেতে না পারে তার জন্য ক্রিম দরকার। তাই ময়েশ্চারাইজার যুক্ত ক্রিম এর নাম হচ্ছে ডার্মালজিকা স্কিন স্মুদিং ক্রিম ময়েশ্চারাইজার।
শেষ কথাঃ ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম -ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম
ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোষ্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।
আজ আর নয়, ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।