রক্ত স্রাব কেন হয় - মাসিকের রক্ত কালো হলে করনীয়

রক্ত স্রাব কেন হয়, সেই বিষয় সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। তাই অতিরিক্ত রক্ত স্রাব কেন হয় এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। আসুন দেখে নেয়া যাক, রক্ত স্রাব কেন হয়?

রক্ত স্রাব কেন হয় - মাসিকের রক্ত কালো হলে করনীয়

রক্ত স্রাব কেন হয়

একজন নারী যখন পরিণত বয়সে পৌঁছায় তখন তার মাসিক শুরু হয়। এবং মাসিক ঋতুস্রাবের এই চক্র নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তবে যদি কোন কারনে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্লিডিং হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। কেননা, অতিরিক্ত পরিমাণে ব্লিডিং হলে শরীরে রক্তের ঘাটতি সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দিতে পারে। 

অতিরিক্ত রক্ত স্রাব কেন হয় এবং কালো স্রাব কেন হয়, সে বিষয় সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি, রক্ত স্রাব কেন হয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে পড়তে হবে। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সাথে এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন যে, রক্ত স্রাব কেন হয়? যাইহোক আসুন দেখে নেয়া যাক, অতিরিক্ত রক্ত স্রাব কেন হয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত। 

  • জরায়ুতে ফাইব্রয়েড: জরায়ুতে ফাইব্রয়েড হলে অনেক সময় অতিরিক্ত পরিমাণে ব্লিডিং হতে পারে। তাই জরায়ুতে ফাইব্রয়েড অতিরিক্ত রক্তস্রাবের অন্যতম একটি কারণ। 
  • এন্ডোমেট্রিয়াল পলিপ: জরায়ুতে যদি পলিপাস হয় সেক্ষেত্রেও কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে ব্লিডিং হতে পারে। এন্ডোমেট্রিয়াল পলিপ হলে জরায়ুর ভেতরে বা জরায়ুর মুখে এক ধরনের অতিরিক্ত পর্দা তৈরি হয় যার ফলে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।  
  • থাইরয়েড: রক্ত স্রাব কেন হয়? এই প্রশ্নের উত্তর হলো কখনো কখনো থাইরয়েডের সমস্যার কারণেও অতিরিক্ত পরিমাণে রক্ত স্রাব দেখা দিতে পারে। 
  • পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ: যোনিতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটলে পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ হতে পারে। আর পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজের কারণে অতিরিক্ত রক্ত স্রাব হতে পারে। 
  • এন্ডোমেট্রিয়োসিস: জরায়ুর ভেতরের আস্তরণে সমস্যার কারণে এন্ডোমেট্রিয়োসিস হয়ে থাকে।এন্ডোমেট্রিয়োসিস সমস্যার কারণে মাসিক ঋতুস্রাবের সময় অধিক রক্তপাত হতে পারে। 
  • জরায়ুর ক্যান্সার: অধিক পরিমাণে মাসিক ঋতুস্রাব জরায়ু ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে। তাই দীর্ঘদিন যাবৎ যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

কালো স্রাব কেন হয় - মাসিকের রক্ত কালো হলে করনীয়

কালো স্রাব কেন হয় বা মাসিকের রক্ত কালো হলে করনীয় কি? তা জানার জন্য আর্টিকেলের এই অংশটি মনোযোগের সাথে পড়ুন। নিচে কালো স্রাব কেন হয় এবং মাসিকের রক্ত কালো হলে করনীয় কি, সে বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। মনোযোগের সহিত আর্টিকেলের এই অংশটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন যে, কালো স্রাব কেন হয় এবং মাসিকের রক্ত কালো হলে করনীয় কি? 

মাসিকের রক্ত শুরুর দিকে এক রঙের হয়ে থাকে, মাঝামাঝি সময়ে আরেক রঙের হয় এবং শেষে ভিন্ন রঙের হতে পারে। সাধারণত মাসিক ঋতুস্রাবের শেষের দিকে মাসিকের রক্তের রং সামান্য কালচে হয়। পিরিয়ডের শেষের দিকে যদি রক্তের রং সামান্য কালচে হয় এতে দুর্ভাবনার কিছু নেই। এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তবে যদি কখনো অতিরিক্ত পরিমাণে কালচে রঙের ব্লিডিং দেখা দেয় এবং তা স্থায়ীভাবে চলতে থাকে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে গাইনোলজিস্ট ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এবং চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। 

মাসিকের রক্ত বেশি হলে করনীয়

জরায়ুর বিভিন্ন কারণে মাসিকের রক্ত অতিরিক্ত পরিমাণে নির্গত হতে পারে। বিশেষ করে, জরায়ুতে যদি টিউমার হয় কিংবা পলিপ থাকে সেক্ষেত্রে এই সমস্যা হতে পারে। জরায়ুতে কপার টি থাকলে এমনকি অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করলেও এ ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাই হোক কোন কারণে যদি মাসিকের রক্ত অতিরিক্ত পরিমাণে বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রে কি করতে হবে। অর্থাৎ মাসিকের রক্ত বেশি হলে করনীয় কি? সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো। 

  • আয়রন জাতীয় খাবার খেতে হবে: মাসিকের রক্ত বেশি হলে করনীয় কাজ সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি কাজ হলো আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। কেননা এই সময় শরীরের অতিরিক্ত রক্ত নির্গত হলে শরীরে রক্তের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যদি আপনি নিয়মিত আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করেন তাহলে রক্তের ঘাটতি পূরণ হবে। প্রয়োজন হলে আয়রন ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। 
  • জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করা: জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করলে, মাসিকের সময় অতিরিক্ত স্রাব নির্গত হওয়া বন্ধ হয়। তাই ঋতুস্রাবের সময় যদি আপনার অতিরিক্ত পরিমাণে রক্ত নির্গত হয় সেক্ষেত্রে, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করতে পারেন। 
  • হরমোন থেরাপি: মাসিকের রক্ত বেশি হলে করনীয় যে সকল কাজ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো, হরমোন থেরাপি। হরমোন থেরাপির মাধ্যমে খুব সহজেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম গ্রহণ করুন: মাসিকের রক্ত বেশি নির্গত হলে অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম গ্রহণ করতে হবে। সুতরাং মাসিকের রক্ত বেশি হলে করনীয় কাজে সমূহের মধ্যে আরেকটি অন্যতম কাজ হলো: পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেয়া।
  • অ্যাসপিরিন ঔষধ সেবন করা যাবে না: মাসিক ঋতুস্রাবের সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ সেবন করলে রক্তস্রাবের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই অবশ্যই আপনাকে এই সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ সেবন করা যাবে না। মাসিকের রক্ত বেশি হলে করনীয় কাজসহ সম্পর্কে আশা করি বিস্তারিত জানতে পারলেন।

মাসিকের রক্ত কম হলে করনীয়

মাসিকের রক্ত কম হলে করনীয় কাজ সমূহ যথাযথভাবে করতে পারলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই আপনি যদি এই সমস্যায় ভুগে থাকেন সেক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাসিকের রক্ত কম হলে করনীয় সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হবে। ইতোমধ্যেই উপরে রক্ত স্রাব কেন হয়? সেই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে।

মাসিক ঋতুস্রাবের সময় নির্দিষ্ট পরিমাণে রক্ত নির্গত হয়ে থাকে। এর কম বা বেশি হলে ধরে নিতে হবে তা কোন সমস্যার কারণে হয়েছে। মাসিকের রক্ত বেশি হলে করনীয় কি? সে বিষয়ে সম্পর্কে ইতিমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটির এই অংশে আলোচনা করা হবে, মাসিকের রক্ত কম হলে করনীয় কি? নিম্ন বর্ণিত, তথ্যগুলো মনোযোগের সাথে পড়লে জানতে পারবেন যে, মাসিকের রক্ত কম হলে করনীয় কি? তো আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক, মাসিকের রক্ত কম হলে করনীয় কাজ সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 

  • নিয়মিত বিটরুট জুস পান করুন। 
  • চকোলেট খেতে পারেন। 
  • তিল বীজ খান। 
  • দারুচিনি খান। 
  • গরম পানির সাথে হলুদ মিশ্রিত করে পান করুন।
  • কাঁচা পেঁপে খান।
  • আনারস খান।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

শেষ কথা

রক্ত স্রাব কেন হয়? আশা করি তা জানতে পেরেছেন। মাসিক ঋতুস্রাব জনিত যাবতীয় সমস্যার সমাধান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার ভালো লেগেছে। আপনি যদি প্রথম থেকে সম্পূর্ণ এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই রক্ত স্রাব সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন। 

আশা করি উপরে বর্ণিত তথ্য গুলো আপনার ভালো লেগেছে। তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন। এতে করে অন্যরাও রক্ত স্রাব সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানার সুযোগ পাবে।

Previous Post Next Post